Monday, July 7, 2014

বিসিবি সভাপতি :

নাজমুল হাসাননাজমুল হাসান[আজ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভা শেষে বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান মুখোমুখি হন সাংবাদিকদের। তাঁর পুরো মন্তব্য এখানে তুলে ধরা হলো]সাকিবের মারাত্মক আচরণগত সমস্যা। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এমনটা কেউ কখনো দেখেনি। আচারণগত সমস্যা যদি তার মধ্যে কিংবা একজন দুজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত, তাহলে কথা ছিল না। সমস্যা বুঝতে আমরা এই কদিনে খেলোয়াড়-কোচ—সবার সঙ্গে কথা বলেছি। বোর্ডের বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলেছি।

দলের ধারাবাহিক বাজে পারফরম্যান্স। কোনো টিমওয়ার্ক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। টিম ম্যানেজারের প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছে, দলীয় ঐক্য নেই। বিস্তারিত বলতে চাই না। এটি কেবল একটি ঘটনা নয়। নানামুখী সমস্যা। যেটি দলের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে। শঙ্কার বিষয়, দলের অন্য খেলোয়াড়দের মধ্যেও এটি সংক্রমিত হচ্ছে। অনেক খেলোয়াড় নাকি ওর মতো আচরণ শুরু করেছে। এটি আমাদের দলের ওপর সর্বনাশ ডেকে আনছে। অবশ্যই এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
এটি এক মাস, দুই মাস ধরে করছে না। তারা বহুদিন ধরেই করছে। বিষয়গুলো এড়িয়ে চলতে চলতে অনেক বড় হয়ে গেছে। দেশের মূল্যবান খেলোয়াড় বলেই আমরা এড়িয়ে গেছি। বোর্ড মনে করছে, এভাবে এড়িয়ে চললে তারা ভবিষ্যতে কাউকে আর মানুষ মনে করবে না! এটি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
সাকিব আমাদের দেশের দূতের মতো। অনেকে বাংলাদেশকে চেনে কেবল তার জন্যই। বিরাট সুনাম অর্জন ও মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যেমন সহজ, তেমনি এটি বজায় রাখতেও তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এ কারণে বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী ছয় মাস জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যে কোনো ধরনের প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট থেকে সাকিব নিষিদ্ধ থাকবে। এবং ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত দেশের বাইরে যে কোনো ধরনের ক্রিকেট লিগে সে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। দেশের বাইরের সমস্ত টুর্নামেন্ট খেলা তার জন্য বন্ধ।
সব কথা আপনাদের বলতে চাই না। আপনারা জানেন, সম্প্রতি সাকিবের স্ত্রীকে উত্তক্ত করা নিয়ে একটা ঘটনা ঘটেছিল। প্রত্যক্ষদর্শী ও নিরাপত্তারক্ষীরা জানিয়েছে, সে ওই ছেলেকে মারধর করেছে। অথচ শুনানিতে যখন আমরা তাঁকে ডাকলাম, সে অকপটে বলল, ‘মারিনি’। তাকে যখন জিজ্ঞেস করা হলো, তাহলে ওপরে (ড্রেসিংরুম ছেড়ে) গেলে কেন? বলল, ‘আমি নিয়ম জানতাম না।’ বোর্ড মনে করছে, এগুলো তার উদ্ধত আচরণের নমুনা। এগুলোকে আর প্রশ্রয় দেওয়া যায় না।           
বাংলাদেশের ক্রিকেট সাকিবের জন্য, সাকিব ষোল কোটি মানুষের—এটি মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। এটি আমাদের জন্য  দুঃখজনক, কষ্টকর ও কঠিন। কিন্তু আমরা বাধ্য হয়েছি এ শাস্তির সিদ্ধান্ত নিতে। ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি হলে আজীবন নিষিদ্ধ হতে হবে। শৃঙ্খলার ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

No comments:

Post a Comment