Thursday, July 24, 2014

কেন আর্টিকেল লিখবেন ?

আর্টিকেল কেন লিখবেন ?আপনি আপনার নিজের স্বার্থের জন্য আর্টিকেল লিখবেন।আপনি ভাবতে পারেন আর্টিকেল লিখে আমার আবার কিসের স্বার্থ ?আছে ,আপনার  স্বার্থ অবশ্যই আছে।আচ্ছা আপনাকে যদি বলা হয় আপনি কেন ব্লগ পরেন ? আপনি বলবেন শিখার জন্য । আচ্ছা শিখে আপনি কি করবেন যদি নিজে কিছু করতে না পারেন। আপনাকে যদি কেও না চেনে,না জানে তাহলে আপনি তেমন বেশি কাজ পাবেন না। আমি আরেকটু ক্লিয়ার করি। মনে করুন “রাসেল” নামে এক ভদ্র লোক ওয়েব ডিজাইন করেন।কিন্তু কেও জানে না যে রাসেল একজন ওয়েব ডিজাইনার ।তাহলে রাসেলের কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা খুব ই কম।সবাই যদি জানত রাসেল একজন ওয়েব ডিজাইনার। তাহলে তার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকত ।রাসেল কিভাবে মানুষদের জানাতে পারে ?সে আর্টিকেল লিখে মানুষদের জানাতে পারে। আপনি আর্টিকেল লিখবেন আপনার নিজের ব্র্যান্ড করার জন্য।   article personal brand

আর্টিকেল লিখে নিজের ব্র্যান্ড করবেন কিভাবে ?

উপরের রাসেল কে দিয়েই ক্লিয়ার করি।রাসেল যদি ওয়েব ডিজাইন এর উপর আর্টিকেল লিখে এবং ভালো লিখে ।ব্লগে যারা তার আর্টিকেল পড়বে,তারা ভাববে রাসেল যেহেতু ওয়েব ডিজাইন এর উপর ভালো লিখেছে। তাহলে রাসেল অবশ্যই একজন ভালো ওয়েব ডিজাইনার।তখন যারা রাসেলেরে আর্টিকেল পরেছে ,তাদের কারো যদি ওয়েব ডিজাইন  করতে ইচ্ছে হয়, তাহলে তারা রাসেল কে কল করবে। ব্যাস , রাসেল আর্টিকেল লিখার মাধ্যমে তার কাজ পেয়ে গেল।

আর্টিকেল অবশ্যই আপনার কাজের সাথে মিল থাকতে হবে

article writing    আপনি একজন টিচার। কিন্তু আপনি আর্টিকেল লিখলেন “কিভাবে মাছ চাষ করবেন” এই শিরনামে।এবং আপনার আর্টিকেলটি অনেক পপুলার হল।সবাই জানলো আপনি মাছ চাষ ভালো জানেন।এখন কেও যদি মাছ চাষ করতে চায়,তাহলে আপনার কাছে হেল্প চাইবে।দেখা যাবে আপনি তাকে হেল্প করতে পারলেন না।কারন আপনি একজন টিচার। আপনি আর্টিকেল লিখলেন কিন্তু আপনার আর্টিকেল আপনার কোন উপকারে আসল  না।তাহলে সেই আর্টিকেল লিখা থেকে বিরত থাকুন। আপনি যদি আর্টিকেল লিখতেন“কিভাবে দ্রুত গণিত শিখা যায়” এই শিরনামে।তাহলে যাদের গনিতে প্রবলেম আছে,তারা আপনার হেল্প নিতো। আপনারও লাভ হত, যারা হেল্প নিতো তারাও লাভবান হত। কারন তারা গনিত শিখতে পারত। 

Monday, July 14, 2014

জার্মানি জিতল ২৪ বছর পর ।

২৪ বছর পর বিশ্বকাপ-২০১৪ এর স্বাদ পেল জার্মানি









ফাইনালে আর্জেন্টিনা কে হারিয়ে,মেসির সব সপ্ন ভঙ্গ করে শেষ হাসি হাসল  জার্মানি


টুর্নামেন্ট এ সেরা খেলোয়াড় হন লিওনেল মেসি । তিনি পান গোল্ডেন বল
টুর্নামেন্ট এর দ্বিতীয় সেরা হন জার্মানিথমাস মুলার

গোল্ডেন বুট জিতেন কলম্বিয়ারদ্রিগেজ


বিয়ে করে নাই...............

১ম বন্ধুঃ দোস্ত
আমি যে মেয়েটারে ভালবাসতাম
সে পরে আর
আমারে বিয়ে করে নাই !!!
২য় বন্ধুঃ আয় হায় কেন ???
তুই বলস নাই যে তোর চাচা কোটিপতি ???
১ম বন্ধুঃ হ্যা বলসিলাম তো।
২য় বন্ধুঃ তাহলে ???





১ম বন্ধুঃ সে জন্যই ও এখন
আমার
চাচী









২য় বন্ধুঃ তোর কপাল তো ভাল
যে তুই বলোস
নাই তোর বাবা কোটিপতি !!

Saturday, July 12, 2014

আর্জেন্টিনা সমর্থকের কান্ড!


ঢাকা : গোপাল চন্দ্র শীল। আর্জেন্টিনার ঘোরতর ভক্ত। পেশায় একজন নরসুন্দর। আর্জেন্টিনার সাফল্যে আত্মহারা সে। এ আনন্দ উদ্যাপনে তার ইচ্ছা এলাকার মানুষকে বড় কোন এক উপহার দেবেন। কিন্তু তিনি তো ধনী নন। সেলুনে চুল ছেঁটে সংসার চালান।

আর্থিক অসঙ্গতি থাকলেও এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিলেন তিনি। তার এলাকায় ৩ দিন ধরে বিনা পয়সায় প্রায় তিনশ’ গরীব ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের চুল ছেঁটেছেন। এখনও ছাঁটছেন। টাকা ছাড়া চুল ছাঁটছেন প্রাপ্তবয়ষ্কদেরও। তবে শিশুদের ভিড় থাকায় বড়রা সুযোগ পাচ্ছেন কম। ঘটনাটি রাজধানীর পশ্চিম আগারগাঁও এলাকার মমতাজ মসজিদ সংলগ্ন এলাকায়।

গোপাল উদ্যোগ দিয়েছেন, ১৩ জুলাই রোববার রাতে জার্মানি বনাম আর্জেন্টিনার ফাইনালে তার প্রিয় দল আর্জেন্টিনা যদি চ্যাম্পিয়ন হয় তবে অন্তত আরও কয়েকদিন তার সেলুনে বিনা পয়সায় শিশুদের চুল ছাঁটবেন।

প্রথমে সাধারণ মানুষ গোপালের এ উদ্যোগকে নিছক পাগলামি মনে করলেও পরে তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। বাহবা দিচ্ছেন আর্জেন্টিনার অপর সমর্থকরা।

গোপালের সেলুনে শিশুদের ভিড়। তারা চুল কাটার জন্য গোপালের দোকানে সকাল থেকে অপেক্ষা করছে। কারও গায়ে আর্জেন্টিনার আকাশি সাদা জার্সি। কারও গায়ে ব্রাজিলের হলুদ সবুজ জার্সি।

শিশুরা তাদের প্রিয় খেলোয়াড়দের মডেলে চুল ছাঁটতে চাইছে। কেউ চাইছে মেসি কাটিং, কেউবা নেইমার কাটিং, আবার কেউ ক্লোসা কাটিং। গোপালও সেই অনুযায়ী ছাঁট দিচ্ছেন। না হলেও ক্ষতি নেই। বিনা পয়সায় কিছু পাওয়ার আনন্দই আলাদা।

সেলুনে একজন শিশুদের সিরিয়াল লিখে যাচ্ছেন। চুল ছাঁটা শেষ হলে শিশুদের হাতে কালি দিয়ে একটি চিহ্ন একে দিচ্ছেন। প্রত্যেক শিশুর হাতে একটি করে চকলেট গুঁজে দিচ্ছেন।

গোপাল চন্দ্র শীলের (৩৮) বাড়ি ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া থানার আনলবুনিয়া গ্রামে। পেশার ঢাকায় এসেছিলেন ১৯৮৯ সালে। তার স্ত্রী অনিতা রানী শীল এবং দুই মেয়ে সোনালি ও রূপালি। এই নিয়ে তার ছোট সংসার।

গোপাল ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত মেক্সিকো বিশ্বকাপে ম্যারাডোনা ও আর্জেন্টিনার খেলা দেখে ভক্ত হয়েছিলেন। গোপাল জানান, ১৯৯০ সালের ইতালিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানি আজেন্টিনাকে হারিয়েছিল। সেদিন কেঁদেছিলাম।

১৯৯৪, ১৯৯৮, ২০০২, ২০০৬ ও ২০১০-এর ফুটবল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে খালিহাতে ফিরতে হয়েছে। দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর যেন আর ফুরোয় না। কেটে গেছে ২ যুগ। পেরিয়ে গেছে পাঁচটি বিশ্বকাপের আসর। কিন্তু আর্জেন্টিনার অপেক্ষার পালা এবার শেষ।

আর্জেন্টিনা ফাইনালে ওঠেছে সেই খুশিতে আত্মহারা গোপাল নিয়েছেন এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন পর আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠেছে। ৯ জুলাই খেলার দিন মনে মনে ভেবেছিলাম যদি আমার প্রিয় দল জেতে তাহলে একটা কিছু করবো। কিন্তু কি করবো তা ভেবে পাচ্ছিলাম না।

গোপাল বলেন, প্রিয় আর্জেন্টিনা জিতল। আমার তেমন আর্থিক সামর্থ্য নেই। ক্ষৌরকর্মই একমাত্র ভরসা। এর সামান্য আয়ে সংসার চলে। ভালো কিছু করতে গেলে প্রচুর টাকার দরকার। শেষে এলাকাবাসী কয়েকজনের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিলাম, আমি ক্ষৌরকার তাই এই কাজ দিয়েই স্মরণীয় কিছু করা যাবে। সেই চিন্তা থেকে খেলা শেষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের চুল কাটা শুরু করলাম। এখনও চালিয়ে যাচ্ছি।

গোপাল জানান, গত দু’দিনে কয়েকশ শিশু ও সাধারণ মানুষের বিনা পয়সায় চুল কেটেছি। এতে আমার কোন ক্লান্তি নেই। এলাকার শিশুরা আমাকে খুব পছন্দ করে। সবাই গোপাল মামা বলে ডাকে। এজন্য আমার কাছে তারা আসে।

এলাকাবাসী জানায়, গোপাল চন্দ্র শীল আগারগাঁও এলাকায় খুবই জনপ্রিয়। প্রায় ২১ বছর ধরে পশ্চিম আগারগাঁও মমতাজ মসজিদের পাশে কাজ করছেন। শিশু থেকে বুড়ো সবাই তাকে পছন্দ করে। শিশুদের চুলছাঁটা কঠিন কাজ। সবাই তা পারে না। গোপাল এ কাজে বেশ দক্ষ। এজন্য বেশিরভাগ শিশুরা তার কাছে চুল কাটাতে আসে। শিশুদের অভিভাবকরাও তার ওপর আস্থাশীল।

স্থানীয়রা জানান, চুল কাটতে অন্তত ৪০-৫০ টাকা খরচ হয়। সেই হিসেবে গোপালদার এ উদ্যোগে এলাকার সুবিধাবঞ্চিত ও দরিদ্র শিশুদের জন্য কিছুটা হলেও উপকারে আসছে।

কয়েকজন জানান, প্রথম প্রথম গোপালের এ উদ্যোগকে নিছক পাগালামি ভেবেছিলাম। কিন্তু পরে বুঝতে পারি কোন একটা মহৎ উদ্দেশ্য এর মধ্যে আছে। তাই তার কর্মকান্ডে আমরাও আনন্দ পাচ্ছি।

এক শিশুর মা জানান, আমার ছেলে গতকাল সারাদিন অপেক্ষায় ছিল গোপালের হাতে চুল কাটবে বলে। কিন্তু সিরিয়াল পাচ্ছিল না। আজকে তার চুল ছাঁটা হয়েছে। তার এই উদ্যোগে আমরা খুশি।

স্থানীয় দোকানীরা জানান, গোপালদা কথা দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনা ফাইনালে গেলে তিনি স্মরণীয় কিছু একটা করবেন। গত দু’দিন ধরে গোপালদার সেলুনে শিশুদের ভিড় লেগেই আছে। যেন চুল ছাঁটার উৎসব।

Friday, July 11, 2014

সাকিবের নিষেধাজ্ঞার পেছনের রহস্য ফাঁস

সাকিব আল হাসানকে ৬ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি আরো যে সাজা দেয়া হয় তা হচ্ছে ‘২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি কোনো লীগে খেলার জন্যও অনাপত্তিপত্র (এনওসি) দেওয়া হবে না তাকে। এখন থেকে বিজ্ঞাপনের শুটিংসহ যে কোনো ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে অংশ নিতে হলে বিসিবির অনুমতি নিতে হবে’।
এছাড়াও বিসিবি জানিয়েছে এখন থেকে সাকিব যদি কোন বিজ্ঞাপন চিত্রে কাজ করতে চায় তাতেও আগে থেকে বিসিবির অনুমুতি নিতে হবে। আর যদি সাকিব এসব নিয়মের কোন ভঙ্গ করে তবে তাকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হবে।
তবে গত সোমবার বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই অবিস্মরণীয় নজিরবিহীন ঘটনার পুরনাঙ্গ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সাকিবের প্রতি বিসিবির এই শাস্তি প্রয়োগ যতটা না ক্রিকেটিও তার থেকে অনেক বেশি ব্যক্তিগত। আর এই ব্যক্তিগত বিষয়টি অনেকটা ক্রোধ হিসেবেই উঠে এসেছে যখন বিসিবি সভাপতি ও সরকারদলীয় সাংসদ নাজমুল হাসান পাপন সংবাদ সম্মেলনে সাকিবের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করছিলেন। এসময় পাপন সাকিবের বিষয়ে কথা বলতে যেয়েই বারবার সাকিবকে তুই তাকারি এবং ও, ও বলে সম্বোধন করছিলেন। যা ব্যক্তিগত ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই মনে হয়েছে। এসময় পাপনের দেহভঙ্গিতে ছিল প্রতিশোধ চরিতার্থ করার আত্মতৃপ্তি।

এসময় পাপন একবার বলেন, ‘ওর বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো শুনেছি…কতগুলো…এত অমানবিক মনে হয়েছে যে আমরা অনেকে ইমোশনাল হয়ে পড়েছিলাম। কীভাবে একটা মানুষ এমন করতে পারে!
এখন জনগনের প্রশ্ন হচ্ছে সাকিব এমন কি কাজ করেছে যা ক্রিকেটের মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে অমানবিক মনে হতে পারে? খেলার সাথে মানবিকতা অমানবিকতার সম্পর্কই বা কোথায়?
এছাড়াও পাপন বলেন ‘আর বাড়তে দেওয়া যাবে না’? এই বিষয়টি অনেকেটা সিনেমার ডায়লগ মনে হয়েছে সবার কাছে।
এদিকে পাপন বলতে না বলতে অবশ্য সাকিবের পেছনে বোর্ডের কর্তাদের নাখোশ হয়ার কারণ বলবনা বলবনা করে বলেই দিলেন, তিনি আমতা আমতা করতে করতে সাংবাদিকদের বলেন, ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশের তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচের খেলা দেখতে গিয়ে সাকিবের স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরকে ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে যা ঘটেছে তার খণ্ডাংশ।
ওই দিন কি হয়েছিলো গ্যালারীতে? ভিআইপি গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডে বসে খেলা দেখতে আসা চার জন তরুণ সাকিবের স্ত্রীকে ইভটিজিং করে। নিপীড়নের ঘটনা জেনে বউকে হেফাজত করতে ছুটে যান সাকিব। এক অপরাধীকে ঘটনাস্থলেই কিল-ঘুষি দেন তিনি। এ ঘটনায় চার অপরাধীর বিরুদ্ধে মামলাও করেন অলরাউন্ডার সকিব।
আবার চলুন জেনে নেয়া যাক ঘন্টনার নেপথ্যে আসল ঘটনাই বা কি?
সবাই যদি খেলা করেন তবে দেখতে পাবেন বিসিবি সভাপতি হয়েও পাপন দেশের একজন ক্রিকেটারের স্ত্রীকে অপমান করার ঘটনার বিষয়টি আমলে নেন নি, তিনি কেবল সাকিবের ইভটিজার দের গায়ে হাত দেয়াটাই আমলে নিয়েছেন। অথচ দেশের ক্রিকেট সংস্থার প্রধান হিসেবে খেলার মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে যদি ক্রিকেটারের পরিবারের উপর হুমকি আসে তবে তা বোর্ডের সচেতন থেকেই দেখা উচিত। কিন্তু বিসিবি সভাপতি একজন জঘন্য ইভটিজারের অপরাধ চেপে রাখতে চাইলেন।
অপরদিকে পাপন বলেন সাকিবের ওই সময়ে গ্যালারীতে যাওয়া এবং ‘একটি ছেলে’র নিপীড়ন থেকে স্ত্রীকে হেফাজত করতে যাওয়া নাকি পাপনের চোখে ‘ধৃষ্টতা’! আর এই ধৃষ্টতাকে ‘আর প্রশ্রয় দেওয়া যায় না’ বলে বিসিবি প্রধানের সে কি দৃঢ়তা!
আসলে এই ঘটনার পেছনে মূল ইতিহাস আমরা ওই অনলাইন পোর্টালের তদন্ত অনুযায়ী তুলে ধরলাম আপনাদের জন্য-
“সাকিবের স্ত্রীকে নিপীড়ন করার সাথে জড়িত চার তরুণই কথিত অভিজাত পরিবারের সদস্য। তাদের একজন রাহিদ রহমানকে (২৩) গত ১৮ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীর ১০ নম্বর রোডের নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতার হওয়া তরুণ ইভটিজিংয়ের মত ফৌজদারি অপরাধে জড়িত হলেও তিনি অভিজাত পরিবারের সন্তান। তার বাবা দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বজলুর রহমান।
এছাড়া অন্য তিন জন ইভটিজারও অভিজাত পরিবারেরই সন্তান। তাদের একজন হলেন চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত সরকারদলীয় এক সাংসদের ছেলে।
ঘটনাচক্রে এই অভিজাত টিজারদের একজনের বাবা বিসিবি প্রধান পাপনের বন্ধু। পাপন যেই ক্লাবের হয়ে ক্রীড়া সংগঠক পরিচয়ে বিসিবির সভাপতি হয়েছেন, ইভটিজারের বাবা আবার সেই ক্লাবের একজন পরিচালক।
বিশ্বের খ্যাতিমান ক্রিকেটার হয়েও স্ত্রীর নিপীড়িত হওয়ার ঘটনায় তিনি বিসিবিকে পাশে পাননি। বরং বিসিবির পক্ষপাত ছিল ইভটিজারদের পক্ষে। এই পক্ষপাতের কারণেই জাতীয় ক্রিকেট দলের টিম হোটেলে গিয়ে ব্যবসায়ী বজলুর রহমান ও তার স্ত্রী সাকিবকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিতে পেরেছেন।
অবশ্য সাকিব অপরাধীদের চাপ সত্ত্বেও মামলা চালানোর ব্যাপারে অটল থাকেন। এতে তিনি বিসিবির চাপের মুখে পড়েন, পাশে দাঁড়ানোর বদলে তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ তুলে শাস্তি দেয়ার পায়তারা করে বিসিবি।
তবে বাংলাদেশের অভিজাতরা যতখানি অভিজাত হোন না কেন সাকিবকে দেখে নেয়াটা তাদের জন্য রিক্সাঅলাদের চড় মারার মত সহজ ব্যাপার নয় কখনোই। সাকিব বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক। দেশ-বিদেশের ক্রিকেটপ্রেমীর অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে তার প্রতি।
গুরুত্বপূর্ণ হল ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সাকিব আল হাসানকে বিশেষ পছন্দ করেন। তার খেলার মুগ্ধ সমর্থক তিনি। তাই সাকিবের জ্বর হলেও তাকে হাসপাতালে দেখতে যান প্রধানমন্ত্রী।
ফলে সাকিবকে শিকার করতে দরকার ছিল চক্রান্তের। যেই চক্রান্ত সামনে রাখলে ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে তার ক্রিকেট খেলা নিষিদ্ধ করা যায়।
চক্রান্তের ধাপগুলো দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না সাকিব বিরোধীরা কত গভীর পানির রুই-কাতলা। প্রথমে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (সিপিএল) খেলতে যাওয়া নিয়ে ফাঁদ পাতা হল, তারপর অসত্য প্রচারণা চালিয়ে প্রথমে তার প্রতি জনমতের একাংশকে বিগড়ে দেয়া হল।
ব্যস, হয়ে গেল। সাকিব বধের যজ্ঞ প্রস্তুত করতে আর কোন অসুবিধা থাকল না ইভটিজার অভিজাতদের সমর্থক বিসিবির অভিজাতদের।
সাকিব সিপিএল খেলার অনাপত্তি পত্র (এনওসি) যোগার করতে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির প্রধান আকরাম খানের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি সাকিবকে বলেছিলেন বিসিবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করতে।
নিজামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সাকিবকে ফের আকরাম খানের সাথেই যোগাযোগ করতে বলেন। এ দফার যোগাযোগে আকরাম তাকে সিপিএলে খেলতে সমস্যা নেই জানিয়ে মৌখিক অনুমতি দিলেন এবং বললেন দেশে ফিরলে এনওসি সাইন করে দেবেন।
কিন্তু আকরাম খানের আশ্বাসে অনাপত্তি ছাড়াই সিপিএল খেলতে যাওয়াই যে ফাঁদে পা দেয়া তা টেরও পাননি সাকিব।
তাই গত বুধবার স্ত্রীকে নিয়ে সাকিব দেশ ছাড়ার পরপরই কলকাঠিগুলো নড়েচড়ে ওঠে। সিপিএল খেলতে বারবাডোজ যাওয়ার পথে লন্ডনে অবস্থান কালেই তাকে যত তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে জাতীয় দলের অনুশীলনে যোগ দিতে বলে দেয় বিসিবি।
বিসিবির নোটিশ পেয়ে গত রোববার দেশে ফিরে আসেন সাকিব। কিন্তু এর মধ্যেই নয়া কোচ চন্দ্রিকা হাথরুসিংয়ের বরাত দিয়ে দেশের পক্ষে সাকিবের ক্রিকেট না খেলার হুমকিসহ নানা অভিযোগের জোরালো প্রচারণা হয়ে গেছে।
তাই দেশে ফিরে সাকিব দেশের হয়ে আরো দশ বছর ক্রিকেট খেলতে চাওয়ার কথা বলেও তার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে পারলেন না। বরং ক্রিকেট বিশ্বে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে বসাতে তার সব অর্জনই এক ঘষাতেই মুছে দেয়া হল।
কিন্তু ঘটনার মূলে যখন উম্মে আহমেদ শিশির নামক একজন নারীর ইভটিজিংয়ের শিকার হওয়া, তখন প্রশ্নটি আসলে বাংলাদেশের নারীর নিরাপত্তার সংক্রান্ত।
এখন কথা হচ্ছে, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার যখন স্ত্রীকে নিপীড়ন থেকে রক্ষা করতে গিয়ে শাস্তির মুখোমুখি হয়ে যান তখন সাধারণ মানুষ কিভাবে স্ত্রী-বোন-বান্ধবীদের অভিজাত বখাটেদের হাত থেকে রক্ষা করবেন?

Tuesday, July 8, 2014

ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে ফাইনালে জার্মানি

অবিশ্বাস্য! অভাবনীয়!! অচিন্তনীয়!!! অকল্পনীয়!!!!
এই জাতীয় আর কী কী শব্দ আছে বলুন তো! এত কিছু বলেও যে এস্তাদিও মিনেরাওয়ের এই ভুতুড়ে সন্ধ্যাকে বোঝানো যাচ্ছে না।
৬০ হাজারের মতো দর্শক দেখলেন এবং অবিশ্বাসে চোখে কচলালেন। নিজের চোখে দেখেও বিশ্বাস হতে চায় না—কথাটার আসল মর্মবাণীও যেন প্রথম বুঝলেন। সেটি বুঝতে স্টেডিয়ামে থাকারই বা কি প্রয়োজন! বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি টেলিভিশন দর্শকেরও কি এই ম্যাচ দেখে একই অনুভূতি হয়নি? যা দেখছি, এ কি সত্যি! নাকি মায়াবী কোনো বিভ্রম!
ম্যাচের ২৯ মিনিট পর স্টেডিয়ামের বড় পর্দায় ভেসে উঠল অবিশ্বাস্য এক স্কোরলাইন—জার্মানি ৫: ব্রাজিল ০! ধেৎ, এ হতে পারে নাকি! বিশ্বকাপ ইতিহাসেই তো কোনো দল সেমিফাইনালের প্রথমার্ধে পাঁচ গোল খায়নি। আর এখানে ব্রাজিল, নিজের মাঠে ব্রাজিল, হেক্সা জয়ের স্বপ্নে বিভোর ব্রাজিল ২৯ মিনিটের মধ্যেই কীভাবে পাঁচ গোল খেয়ে ফেলে!
বিশ্বকাপে এর আগে একবারই এক ম্যাচে পাঁচ গোল খেয়েছিল ব্রাজিল। সেটি ১৯৩৮ ফ্রান্স বিশ্বকাপে। পোল্যান্ডের বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো সেই ম্যাচে পাঁচ গোল খেয়ে ছয়টি দিয়েছিল ব্রাজিল। হ্যাটট্রিক করেছিলেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের প্রথম সুপারস্টার লিওডিনাস ডা সিলভা।
চোখে জল। ভাষাহীন দুজনেই। জার্মান বুলডোজারে পিষ্ট হওয়ার পর ব্রাজিলের কালকের ম্যাচের অধিনায়ক ডেভিড লুইসকে নিয়মিত অধিনায়ক থিয়াগো সিলভার কান্নাভেজা সান্ত্বনা l ছবি: রয়টার্সসেটি অবশ্যই ৫-০ হয়ে যাওয়ার পর নয়। নির্ধারিত সময়ে ৪-৪ ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে লিওডিনাস দুই গোল করার পর পোল্যান্ডের পঞ্চম গোল। পাঁচ গোল খাওয়া নিয়ে এত গবেষণার অবশ্য কোনো অর্থই থাকছে না, কারণ শেষ পর্যন্ত ‘ব্রাজিলিয়ান লজ্জা’ তো পাঁচ গোলেও শেষ হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুই গোল করে স্কোরলাইনটাকে ৭-০ বানিয়ে ফেললেন আন্দ্রে শুরলে। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে কোনো দল সাত গোল করল এই প্রথম।
অল্প শোকে মানুষ কাতর হয়। আরেকটু বেশি শোকে কাঁদে। অধিক শোকে পাথর হয়ে যায়। কিন্তু অভাবনীয় কিছু হলে একটা সময় বিচিত্র আচরণ করতে থাকে। কাল এস্তাদিও মিনেইরোর গ্যালারি ভালোমতোই এর প্রমাণ দিল। যখন শেষ বাঁশি বাজার অপেক্ষা, অস্কার একটি গোল শোধ করায় গ্যালারি থেকে গোওওল-গোওওল বলে যে চিৎকারটা উঠল, তাতে মনে হতেই পারত এতে স্কোরলাইন ৭-১ হয়নি। ব্রাজিল বোধ হয় সমতা এনে ফেলেছে।
বিকেলে স্টেডিয়ামমুখী ব্রাজিলের বাসকে অনেকটা সময় অনুসরণ করল টেলিভিশন ক্যামেরা। কাচের আড়াল ভেদ করে দেখা যাচ্ছিল, ব্রাজিলিয়ানরা গান গাইছে। বাস থেকে একে একে নেমে এলেন সবাই। সবার মাথায় সাদা টুপিতে লেখা—Forca Neymar। নেইমার তুমি শক্ত থাকো। এই ম্যাচ শুরুর ১০ মিনিট পর থেকেই যেসব ভুতুড়ে কাণ্ড ঘটতে শুরু করল, তাতে নেইমার শক্ত থাকবেন কি, বরং তাঁর পিঠের ব্যথা নির্ঘাত বুকে চলে আসার কথা।
নেইমার থাকলেও এমন কিছু হতো কি না, এই প্রশ্নই অবান্তর। কিন্তু ম্যাচ শুরুর আগে প্রতিটি খেলোয়াড়কে জড়িয়ে ধরে যিনি উৎসাহ দিলেন, সেই থিয়াগো সিলভার অভাবটা প্রতি মুহূর্তেই অনুভব করল ব্রাজিল। সেই অভাব শুধু একজন ডিফেন্ডারের নয়, ডিফেন্সে একজন নেতার। ডিফেন্স বলতে কাল কিছু তো ছিলই না ব্রাজিলের। ক্রুসের কর্নার থেকে টমাস মুলার ভলিতে প্রথম গোল করলেন। আশপাশে কোনো ডিফেন্ডার নেই, স্কুল ফুটবলেও এমন ফাঁকায় বল পাওয়াটা যেকোনো খেলোয়াড়ের স্বপ্ন।
২২ থেকে ২৯—এই আট মিনিটে যা হলো, বিশ্বকাপ কোনো দিন এমন কিছু দেখেনি। জার্মানি যেন ইচ্ছা হলো আর গোলের পর গোল করে গেল। টনি ক্রুস দুটি গোল করলেন, খেদিরা একটি, অন্য গোলটির আবার বিশেষ মহিমা। ২২ মিনিটে জার্মানির দ্বিতীয় গোলটি করেই যে মিরোস্লাভ ক্লোসা বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্কোরার হয়ে গেলেন।
বেলো হরিজেন্তের এই রাত যেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলকে কালিমালিপ্ত করার সব আয়োজন সম্পন্ন করে রেখেছিল। গৌরবের যা কিছু আছে, সব কেড়ে নেওয়ারও। সেই ১৯২০ সালে উরুগুয়ের বিপক্ষে ৬-০ গোলে হেরেছিল ব্রাজিল, ৭-১ যোগ-বিয়োগে ছয় গোলের ব্যবধানই বলে। তবে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরাজয় হিসেবে লেখা থাকবে এটিই।
গৌরব কেড়ে নেওয়ার কথা বলছিলাম। এই ম্যাচের আগে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ড ছিল ব্রাজিলের। সেটি কেড়ে নিল জার্মানি। ক্লোসাও কেড়ে নিলেন রোনালদোর রেকর্ড। যিনি বিরস মুখে কোন একটা টেলিভিশনে ধারাভাষ্য দিতে মিডিয়া ট্রিবিউনে কয়েক সারি আগেই বসা।
ম্যাচের শুরুতে গ্যালারিতে হলুদ গর্জনে যে জার্মানদের উপস্থিতিই টের পাওয়া যাচ্ছিল না, আধঘণ্টা পর থেকে মনে হলো তাঁরাই বুঝি সংখ্যাগরিষ্ঠ। ম্যাচ শেষে জার্মান খেলোয়াড়েরা তাঁদের সামনে, অভিবাদন দেওয়া-নেওয়া হলো। আর ব্রাজিলিয়ানরা তখন কাঁদছে। এই ম্যাচের অধিনায়ক ডেভিড লুইজকে জড়িয়ে ধরে মাঠ থেকে বের করে আনলেন থিয়াগো সিলভা। মার্সেলো কাঁদছেন, অস্কার কাঁদছেন, কে না...!
এক-দুই গোলে সেমিফাইনাল হারলেও কান্নাকাটি হতো আর এ তো শুধুই একটা পরাজয় নয়। ব্রাজিলের ফুটবল অভিধানে ‘মারাকানাজো’র পাশে ‘মিনেইরোজো’ও যে লেখা হয়ে গেল এখানে!

Monday, July 7, 2014

ড. আতিউর রহমান :: রাখাল থেকে অর্থনীতিবিদ এবং পরে গভর্ণর!!!



দেশবরেণ্য অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্ণর ড. আতিউর রহমানের ছেলেবেলা কেটেছে গরু-ছাগল চরিয়ে!! সেখান থেকে আজকের অবস্থানে পৌঁছাতে তাঁকে অনেক ত্যাগ স্বীকার ও সংগ্রাম করতে হয়েছে। সেই কাহিনীই শুনুন তাঁর মুখে।

 আমার জন্ম জামালপুর জেলার এক অজপাড়াগাঁয়ে। ১৪ কিলোমিটার দূরের শহরে যেতে হতো পায়ে হেঁটে বা সাইকেলে চড়ে। পুরো গ্রামের মধ্যে একমাত্র মেট্রিক পাস ছিলেন আমার চাচা মফিজউদ্দিন। আমার বাবা একজন অতি দরিদ্র ভূমিহীন কৃষক। আমরা পাঁচ ভাই, তিন বোন। কোনরকমে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটতো আমাদের।

আমার দাদার আর্থিক অবস্থা ছিলো মোটামুটি। কিন্তু তিনি আমার বাবাকে তাঁর বাড়িতে ঠাঁই দেননি। দাদার বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে একটা ছনের ঘরে আমরা এতগুলো ভাই-বোন আর বাবা-মা থাকতাম। মা তাঁর বাবার বাড়ি থেকে নানার সম্পত্তির সামান্য অংশ পেয়েছিলেন। তাতে তিন বিঘা জমি কেনা হয়। চাষাবাদের জন্য অনুপযুক্ত ওই জমিতে বহু কষ্টে বাবা যা ফলাতেন, তাতে বছরে ৫/৬ মাসের খাবার জুটতো। দারিদ্র্য কী জিনিস, তা আমি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছি- খাবার নেই, পরনের কাপড় নেই; কী এক অবস্থা!

আমার মা সামান্য লেখাপড়া জানতেন। তাঁর কাছেই আমার পড়াশোনার হাতেখড়ি। তারপর বাড়ির পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হই। কিন্তু আমার পরিবারে এতটাই অভাব যে, আমি যখন তৃতীয় শ্রেণীতে উঠলাম, তখন আর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকলো না। বড় ভাই আরো আগে স্কুল ছেড়ে কাজে ঢুকেছেন। আমাকেও লেখাপড়া ছেড়ে রোজগারের পথে নামতে হলো।

আমাদের একটা গাভী আর কয়েকটা খাসি ছিল। আমি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওগুলো মাঠে চরাতাম। বিকেল বেলা গাভীর দুধ নিয়ে বাজারে গিয়ে বিক্রি করতাম। এভাবে দুই ভাই মিলে যা আয় করতাম, তাতে কোনরকমে দিন কাটছিল। কিছুদিন চলার পর দুধ বিক্রির আয় থেকে সঞ্চিত আট টাকা দিয়ে আমি পান-বিড়ির দোকান দেই। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানে বসতাম। পড়াশোনা তো বন্ধই, আদৌ করবো- সেই স্বপ্নও ছিল না!!

এক বিকেলে বড় ভাই বললেন, আজ স্কুল মাঠে নাটক হবে। স্পষ্ট মনে আছে, তখন আমার গায়ে দেওয়ার মতো কোন জামা নেই। খালি গা আর লুঙ্গি পরে আমি ভাইয়ের সঙ্গে নাটক দেখতে চলেছি। স্কুলে পৌঁছে আমি তো বিস্ময়ে হতবাক! চারদিকে এত আনন্দময় চমৎকার পরিবেশ! আমার মনে হলো, আমিও তো আর সবার মতোই হতে পারতাম। সিদ্ধান্ত নিলাম, আমাকে আবার স্কুলে ফিরে আসতে হবে।

নাটক দেখে বাড়ি ফেরার পথে বড় ভাইকে বললাম, আমি কি আবার স্কুলে ফিরে আসতে পারি না? আমার বলার ভঙ্গি বা করুণ চাহনি দেখেই হোক কিংবা অন্য কোন কারণেই হোক কথাটা ভাইয়ের মনে ধরলো। তিনি বললেন, ঠিক আছে কাল হেডস্যারের সঙ্গে আলাপ করবো।

পরদিন দুই ভাই আবার স্কুলে গেলাম। বড় ভাই আমাকে হেডস্যারের রুমের বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে ভিতরে গেলেন। আমি বাইরে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট শুনছি, ভাই বলছেন আমাকে যেন বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগটুকু দেওয়া হয়। কিন্তু হেডস্যার অবজ্ঞার ভঙ্গিতে বললেন, সবাইকে দিয়ে কি লেখাপড়া হয়!

স্যারের কথা শুনে আমার মাথা নিচু হয়ে গেল। যতখানি আশা নিয়ে স্কুলে গিয়েছিলাম, স্যারের এক কথাতেই সব ধুলিস্মাৎ হয়ে গেল। তবু বড় ভাই অনেক পীড়াপীড়ি করে আমার পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি যোগাড় করলেন। পরীক্ষার তখন আর মাত্র তিন মাস বাকি। বাড়ি ফিরে মাকে বললাম, আমাকে তিন মাসের ছুটি দিতে হবে। আমি আর এখানে থাকবো না। কারণ ঘরে খাবার নেই, পরনে কাপড় নেই- আমার কোন বইও নেই, কিন্তু আমাকে পরীক্ষায় পাস করতে হবে।

মা বললেন, কোথায় যাবি? বললাম, আমার এককালের সহপাঠী এবং এখন ক্লাসের ফার্স্টবয় মোজাম্মেলের বাড়িতে যাবো। ওর মায়ের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে। যে ক’দিন কথা বলেছি, তাতে করে খুব ভালো মানুষ বলে মনে হয়েছে। আমার বিশ্বাস, আমাকে উনি ফিরিয়ে দিতে পারবেন না।

দুরু দুরু মনে মোজাম্মেলের বাড়ি গেলাম। সবকিছু খুলে বলতেই খালাম্মা সানন্দে রাজি হলেন। আমার খাবার আর আশ্রয় জুটলো; শুরু হলো নতুন জীবন। নতুন করে পড়াশোনা শুরু করলাম। প্রতিক্ষণেই হেডস্যারের সেই অবজ্ঞাসূচক কথা মনে পড়ে যায়, জেদ কাজ করে মনে; আরো ভালো করে পড়াশোনা করি।

যথাসময়ে পরীক্ষা শুরু হলো। আমি এক-একটি পরীক্ষা শেষ করছি আর ক্রমেই যেন উজ্জীবিত হচ্ছি। আমার আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যাচ্ছে। ফল প্রকাশের দিন আমি স্কুলে গিয়ে প্রথম সারিতে বসলাম। হেডস্যার ফলাফল নিয়ে এলেন। আমি লক্ষ্য করলাম, পড়তে গিয়ে তিনি কেমন যেন দ্বিধান্বিত। আড়চোখে আমার দিকে তাকাচ্ছেন। তারপর ফল ঘোষণা করলেন। আমি প্রথম হয়েছি! খবর শুনে বড় ভাই আনন্দে কেঁদে ফেললেন। শুধু আমি নির্বিকার- যেন এটাই হওয়ার কথা ছিল।

বাড়ি ফেরার পথে সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। আমি আর আমার ভাই গর্বিত ভঙ্গিতে হেঁটে আসছি। আর পিছনে এক দল ছেলেমেয়ে আমাকে নিয়ে হৈ চৈ করছে, স্লোগান দিচ্ছে। সারা গাঁয়ে সাড়া পড়ে গেল! আমার নিরক্ষর বাবা, যাঁর কাছে ফার্স্ট আর লাস্ট একই কথা- তিনিও আনন্দে আত্মহারা; শুধু এইটুকু বুঝলেন যে, ছেলে বিশেষ কিছু একটা করেছে। যখন শুনলেন আমি ওপরের কাসে উঠেছি, নতুন বই লাগবে, পরদিনই ঘরের খাসিটা হাটে নিয়ে গিয়ে ১২ টাকায় বিক্রি করে দিলেন। তারপর আমাকে সঙ্গে নিয়ে জামালপুর গেলেন। সেখানকার নবনূর লাইব্রেরি থেকে নতুন বই কিনলাম।

আমার জীবনযাত্রা এখন সম্পূর্ণ বদলে গেছে। আমি রোজ স্কুলে যাই। অবসরে সংসারের কাজ করি। ইতোমধ্যে স্যারদের সুনজরে পড়ে গেছি। ফয়েজ মৌলভী স্যার আমাকে তাঁর সন্তানের মতো দেখাশুনা করতে লাগলেন। সবার আদর, যত্ন, স্নেহে আমি ফার্স্ট হয়েই পঞ্চম শ্রেণীতে উঠলাম। এতদিনে গ্রামের একমাত্র মেট্রিক পাস মফিজউদ্দিন চাচা আমার খোঁজ নিলেন। তাঁর বাড়িতে আমার আশ্রয় জুটলো।

প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে আমি দিগপাইত জুনিয়র হাই স্কুলে (বর্তমান দিগপাইত ডি.কে উচ্চ বিদ্যালয়) ভর্তি হই। চাচা ওই স্কুলের শিক্ষক। অন্য শিক্ষকরাও আমার সংগ্রামের কথা জানতেন। তাই সবার বাড়তি আদর-ভালোবাসা পেতাম।

আমি যখন সপ্তম শ্রেণী পেরিয়ে অষ্টম শ্রেণীতে উঠবো, তখন চাচা একদিন কোত্থেকে যেন একটা বিজ্ঞাপন কেটে নিয়ে এসে আমাকে দেখালেন। ওইটা ছিল ক্যাডেট কলেজে ভর্তির বিজ্ঞাপন। যথাসময়ে ফরম পুরণ করে পাঠালাম। এখানে বলা দরকার, আমার নাম ছিল আতাউর রহমান। কিন্তু ক্যাডেট কলেজের ভর্তি ফরমে স্কুলের হেডস্যার আমার নাম আতিউর রহমান লিখে চাচাকে বলেছিলেন, এই ছেলে একদিন অনেক বড় কিছু হবে। দেশে অনেক আতাউর আছে। ওর নামটা একটু আলাদা হওয়া দরকার; তাই আতিউর করে দিলাম।

আমি রাত জেগে পড়াশোনা করে প্রস্তুতি নিলাম। নির্ধারিত দিনে চাচার সঙ্গে পরীক্ষা দিতে রওনা হলাম। ওই আমার জীবনে প্রথম ময়মনসিংহ যাওয়া। গিয়ে সবকিছু দেখে তো চক্ষু চড়কগাছ! এত এত ছেলের মধ্যে আমিই কেবল পায়জামা আর স্পঞ্জ পরে এসেছি! আমার মনে হলো, না আসাটাই ভালো ছিল। অহেতুক কষ্ট করলাম। যাই হোক পরীক্ষা দিলাম; ভাবলাম হবে না। কিন্তু দুই মাস পর চিঠি পেলাম, আমি নির্বাচিত হয়েছি। এখন চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে যেতে হবে।



সবাই খুব খুশি; কেবল আমিই হতাশ। আমার একটা প্যান্ট নেই, যেটা পরে যাবো। শেষে স্কুলের কেরানি কানাই লাল বিশ্বাসের ফুলপ্যান্টটা ধার করলাম। আর একটা শার্ট যোগাড় হলো। আমি আর চাচা অচেনা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হলাম। চাচা শিখিয়ে দিলেন, মৌখিক পরীক্ষা দিতে গিয়ে আমি যেন দরজার কাছে দাঁড়িয়ে বলি: ম্যা আই কাম ইন স্যার? ঠিকমতোই বললাম। তবে এত উচ্চস্বরে বললাম যে, উপস্থিত সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।

পরীক্ষকদের একজন মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের অধ্যক্ষ এম. ডাব্লিউ. পিট আমাকে আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করে সবকিছু আঁচ করে ফেললেন। পরম স্নেহে তিনি আমাকে বসালেন। মুহূর্তের মধ্যে তিনি আমার খুব আপন হয়ে গেলেন। আমার মনে হলো, তিনি থাকলে আমার কোন ভয় নেই। পিট স্যার আমার লিখিত পরীক্ষার খাতায় চোখ বুলিয়ে নিলেন। তারপর অন্য পরীক্ষকদের সঙ্গে ইংরেজিতে কী-সব আলাপ করলেন। আমি সবটা না বুঝলেও আঁচ করতে পারলাম যে, আমাকে তাঁদের পছন্দ হয়েছে। তবে তাঁরা কিছুই বললেন না। পরদিন ঢাকা শহর ঘুরে দেখে বাড়ি ফিরে এলাম। যথারীতি পড়াশোনায় মনোনিবেশ করলাম। কারণ আমি ধরেই নিয়েছি, আমার চান্স হবে না।

হঠাৎ তিন মাস পর চিঠি এলো। আমি চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছি। মাসে ১৫০ টাকা বেতন লাগবে। এর মধ্যে ১০০ টাকা বৃত্তি দেওয়া হবে, বাকি ৫০ টাকা আমার পরিবারকে যোগান দিতে হবে। চিঠি পড়ে মন ভেঙে গেল। যেখানে আমার পরিবারের তিনবেলা খাওয়ার নিশ্চয়তা নেই, আমি চাচার বাড়িতে মানুষ হচ্ছি, সেখানে প্রতিমাসে ৫০ টাকা বেতন যোগানোর কথা চিন্তাও করা যায় না!

এই যখন অবস্থা, তখন প্রথমবারের মতো আমার দাদা সরব হলেন। এত বছর পর নাতির (আমার) খোঁজ নিলেন। আমাকে অন্য চাচাদের কাছে নিয়ে গিয়ে বললেন, তোমরা থাকতে নাতি আমার এত ভালো সুযোগ পেয়েও পড়তে পারবে না? কিন্তু তাঁদের অবস্থাও খুব বেশি ভালো ছিল না। তাঁরা বললেন, একবার না হয় ৫০ টাকা যোগাড় করে দেবো, কিন্তু প্রতি মাসে তো সম্ভব নয়। দাদাও বিষয়টা বুঝলেন।

আমি আর কোন আশার আলো দেখতে না পেয়ে সেই ফয়েজ মৌলভী স্যারের কাছে গেলাম। তিনি বললেন, আমি থাকতে কোন চিন্তা করবে না। পরদিন আরো দুইজন সহকর্মী আর আমাকে নিয়ে তিনি হাটে গেলেন। সেখানে গামছা পেতে দোকানে দোকানে ঘুরলেন। সবাইকে বিস্তারিত বলে সাহায্য চাইলেন। সবাই সাধ্য মতো আট আনা, চার আনা, এক টাকা, দুই টাকা দিলেন। সব মিলিয়ে ১৫০ টাকা হলো। আর চাচারা দিলেন ৫০ টাকা। এই সামান্য টাকা সম্বল করে আমি মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হলাম। যাতায়াত খরচ বাদ দিয়ে আমি ১৫০ টাকায় তিন মাসের বেতন পরিশোধ করলাম। শুরু হলো অন্য এক জীবন।

প্রথম দিনেই এম. ডাব্লিউ. পিট স্যার আমাকে দেখতে এলেন। আমি সবকিছু খুলে বললাম। আরো জানালাম যে, যেহেতু আমার আর বেতন দেওয়ার সামর্থ্য নেই, তাই তিন মাস পর ক্যাডেট কলেজ ছেড়ে চলে যেতে হবে। সব শুনে স্যার আমার বিষয়টা বোর্ড মিটিঙে তুললেন এবং পুরো ১৫০ টাকাই বৃত্তির ব্যবস্থা করে দিলেন। সেই থেকে আমাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এস.এস.সি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে পঞ্চম স্থান অধিকার করলাম এবং আরো অনেক সাফল্যের মুকুট যোগ হলো।

আমার জীবনটা সাধারণ মানুষের অনুদানে ভরপুর। পরবর্তীকালে আমি আমার এলাকায় স্কুল করেছি, কলেজ করেছি। যখন যাকে যতটা পারি, সাধ্যমতো সাহায্য সহযোগিতাও করি। কিন্তু সেই যে হাট থেকে তোলা ১৫০ টাকা; সেই ঋণ আজও শোধ হয়নি। আমার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করলেও সেই ঋণ শোধ হবে না! 



(অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমানের নিজের ভাষায় তাঁর জীবন কথা)।

[লেখাটি রুদ্ধশ্বাসে পড়তে পড়তে বুকের ভেতর কোথায় যেন কোন্ পাড় ভাঙার শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম! সত্যিই অবিশ্বাস্য! এবং শেষ লাইনটা অতিক্রম করেই টের পেলাম, চোখের কোণের আর্দ্রতা কখন যে গড়াতে শুরু করেছে! ইচ্ছে হলো, ইশ, তাঁর পা ছুঁয়ে যদি একটি বার সালাম করতে পারতাম!
আমার এ অনুভূতি হয়তো একান্তই আমার। তবু সবার সাথে এ অনুভব শেয়ার না করে পারলাম না। রাজিব আহমেদ এর ‘আতিউর রহমান : রাখাল থেকে অর্থনীতিবিদ’ শিরোনামের পুরো লেখাটিই কম্পোজ করে উপরে তুলে দিলাম।]

৫০ বছরের মধ্যে চাঁদে বসতি: হকিং

স্টিফেন হকিং।স্টিফেন হকিং।পঞ্চাশ বছরের মধ্যে যে চাঁদে মানববসতি গড়ে উঠবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এমন জোরালো আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পদার্থবিজ্ঞানের জীবন্ত কিংবদন্তি স্টিফেন হকিং। আর ২১০০ সাল নাগাদ মানুষ মঙ্গলে থাকবে বলেও আশা করছেন তিনি।
গত রোববার যুক্তরাজ্যভিত্তিক চ্যানেল ফোরে মহাকাশ-সংক্রান্ত সরাসরি প্রচারিত একটি অনুষ্ঠানে এ প্রত্যাশার কথা জানান হকিং।
৭২ বছর বছর বয়সী এই বিজ্ঞানী বলেন, ‘আমাদের গ্রহ বুড়িয়ে গেছে। মানুষ বাড়ছে তো বাড়ছেই, সম্পদও সীমিত হয়ে এসেছে। এসব হুমকির বিষয়ে আমাদের নজর দিতে হবে এবং একটি বিকল্প পরিকল্পনা বেছে নিতে হবে।’
হকিং বলেন, ‘আমরা যদি নতুন গ্রহে বসতি স্থাপনে ব্যর্থ হই, তবে মানবজাতি বিলুপ্তির মুখোমুখি হবে। কারণ জনসংখ্যা বেড়ে যাবে। পৃথিবীর পক্ষে এই জনসংখ্যা ধারণ করা সম্ভব হবে না।’
হকিংয়ের মতে, দ্রুতই এমন প্রযুক্তিগত অগ্রগতি সাধিত হবে, যাতে মানুষ এই নতুন বিশ্বে খাপ খাওয়াতে পারে। তাঁর মতে, এই শতক হবে সত্যিকারের মহাকাশ যুগ। চলতি শতকের শেষ নাগাদ মানুষ মঙ্গলে বাস করবে বলে সত্যিকার অর্থেই বিশ্বাস করেন হকিং।

কৃষকের উদ্ভাবন ‘সুটকেস কার’


আরও ছবিপরিশ্রম করলে তার ফল মেলে কথাটা চীনের কৃষক হি লিয়াংচি ভালো করে জানেন। তিনি গত দশ বছর ধরে পরিশ্রম করে তৈরি করেছেন একটি সুটকেস কার। এই সুটকেস কারে করে মালপত্র বহনের পাশাপাশি নিজেও যাতাযাত করেন তিনি। গতকাল এএফপির এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চীনের হুনান প্রদেশের এই কৃষক সুটকেস গাড়িতে চড়ে প্রতিদিন কয়েক কিলোমিটার যাতাযাত করেন। সাত কেজি ওজনের এই গাড়িটিতে দুজন বেশ স্বচ্ছন্দেই চড়তে পারে। গাড়িটির গতিও ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার। এতে জিপিএস নেভিগেটর রয়েছে এবং যাতে চুরি না হয় সেজন্য বিশেষ অ্যালার্মও রয়েছে। গাড়িটি চলে ব্যাটারিতে। অর্থাত্ লিয়াংচিকে এটি নিয়মিত চার্জ দিতে হয় ।
পেশায় কৃষক হলেও উদ্ভাবক হিসেবে খ্যাতি রয়েছে তাঁর। এর আগে ১৯৯৯ সালে গাড়ির নিরাপত্তা পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে পুরস্কারও পেয়েছিলেন।
নতুন এই সুটকেস গাড়ি তৈরি কথা মাথায় কীভাবে এল? লিয়াংচি বলেন, পুরস্কার নিতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পথে তাঁর সুটকেস হারিয়ে গিয়েছিল। তখনই তিনি এই সুটকেস গাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন।

যানজট ঠেকাতে ঝুলন্ত গাড়ি

স্কাইট্র্যান সিস্টেমস্কাইট্র্যান সিস্টেমমাথার ওপর দিয়ে এলিভেটেড নেটওয়ার্ক সিস্টেমে চলবে গাড়ি। একটি নির্দিষ্ট ট্র্যাক ব্যবহার করে একের পর এক গাড়ি ছেড়ে যাবে। মোবাইল ফোন ব্যবহার করে এই গাড়ি ডেকে তাতে উঠে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে। বিবিসির এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রাস্তার যানজটে অতিষ্ঠ জীবন। যানজট দূর করার নানা উপায় নিয়ে কাজ চলছে। এ রকম একটি পদ্ধতি হচ্ছে স্কাইট্র্যান সিস্টেম। এটি হোভার কারের এলিভেটেড নেটওয়ার্ক। (উঁচু কোনো কাঠামোর নেটওয়ার্কে স্থাপিত ঝুলন্ত গাড়ির পদ্ধতি)। ইসরায়েলের তেল আবিবে তৈরি হচ্ছে এই নেটওয়ার্ক।

স্কাইট্র্যান কর্তৃপক্ষ তেল আবিবের ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ড্রাস্ট্রিজের (আইএআই) ক্যাম্পাসে বাণিজ্যিক নেটওয়ার্কের মতো করে পরীক্ষামূলকভাবে ৫০০ মিটার লুপ তৈরি করা হবে। এটি মূলত চৌম্বক পদ্ধতির একটি নেটওয়ার্ক। দুই যাত্রী বহনে সক্ষম গাড়ি এলিভেটেড ম্যাগনেটিক ট্র্যাকে ছাড়া হবে। ২০১৫ সাল থেকে এই নেটওয়ার্ক পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে।

স্কাইট্র্যান কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এলিভেটেড হোভার কার প্রযুক্তিটি বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরুর আগে পরীক্ষামূলক এই পদ্ধতিটি সফল হবে। এই পদ্ধতিতে স্মার্টফোন ব্যবহার করে কোনো নির্দিষ্ট স্টেশনে গাড়ির জন্য ফরমায়েশ করা যাবে এবং সেই স্টেশন গাড়িতে ওঠার পর নির্দিষ্ট স্থানে দ্রুত পৌঁছে দেবে এই হোভার কার। গাড়ির গতি হবে ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার। তবে বাণিজ্যিকভাবে এই নেটওয়ার্ক তৈরি করা হলে গাড়ির গতি আরও বেশি হবে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই স্কাইট্র্যান প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র এই তালিকায় রয়েছে। ইসরায়েলের প্রকল্পটি সফল হলে অন্যান্য দেশেও এর বাণিজ্যিকভাবে বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে।
স্মার্ট সিটি বিশেষজ্ঞ জন ডিগনান মনে করেন, এই পদ্ধতিটি বর্তমান অবকাঠামো ও স্বয়ংক্রিয় গাড়ি ব্যবস্থার হাইব্রিড পদ্ধতি। ট্রেন লাইন স্থাপনের চেয়ে এর খরচ কম হবে।

ঢাকায় নতুন বিএমডব্লিউ উদ্বোধন

বিএমডব্লিউ এক্স৫ উদ্বোধন করছেন এক্সিকিউটিভ মোটরসের কর্মকর্তারাবিএমডব্লিউ এক্স৫ উদ্বোধন করছেন এক্সিকিউটিভ মোটরসের কর্মকর্তারাঢাকায় তৃতীয় প্রজন্মের বিএমডব্লিউ এক্স৫ গাড়ি উদ্বোধন করেছে প্রযুক্তিপণ্য, অটোমোবাইল ও ইলেকট্রনিক পণ্যের বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান এক্সিকিউটিভ মোটরস। বিএমডব্লিউ এক্স৫ একটি স্পোর্টস অ্যাকটিভিটি ভেহিকল (এসএভি)।
ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় সম্প্রতি নতুন শোরুম উদ্বোধন করেছে এক্সিকিউটিভ মোটরস । এই শোরুমে নতুন বিএমডব্লিউ উদ্বোধন করেছে তারা।
এক্সিকিউটিভ মোটরসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় চার হাজার বর্গফুটের বিএমডব্লিউ শোরুমের ডিসপ্লেতে ছয়টি বিএমডব্লিউ রয়েছে। এখানে একটি লাইফ স্টাইল কর্ণারও রয়েছে।
এক্সিকিউটিভ মোটরসের ব্যবস্থাপক দেওয়ান মোহম্মদ সাজিদ আফজাল জানান, বাজারে বিএমডব্লিউ গাড়ির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। গ্রাহকদের অভিজ্ঞতা উন্নয়নে এবং এক্ষেত্রে আমাদের গ্রাহকদের সামগ্রিক অভিজ্ঞতা উন্নয়নে এই নতুন শোরুমের উদ্বোধন করা হয়েছে । এই শোরুমে তৃতীয় প্রজন্মের বিএমডব্লিউ এক্স৫ প্রদর্শিত হচ্ছে।

অদ্ভুত যত ট্রাফিক আইন

গাড়িগাড়িবিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেশ কিছু অদ্ভুত ট্রাফিক আইন রয়েছে। গাড়িচালকদের এমন কিছু অদ্ভুত ট্রাফিক আইন মানতে হয়, যা শুনলে আপনার অবিশ্বাস্যই মনে হবে। বিভিন্ন দেশের অদ্ভুত এসব ট্রাফিক আইন নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এনডিটিভি।

ময়লা গাড়ি, জরিমানা নিশ্চিত
আপনি অলস! গাড়ি ঠিকমতো পরিষ্কার করেন না বলে আপনার জরিমানা হতে পারে—এমন ট্রাফিক আইন আছে রাশিয়ায়। আপনি যদি এমন গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হন সেক্ষেত্রে নির্ঘাত আপনাকে দুই হাজার রুব্ল জরিমানা গুনতে হবে।

গাড়িতে বসে অভিশাপ দিলে কারাদণ্ড
জনসমক্ষে অভিশাপ দিয়েছেন তো বিপদে পড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডে রয়েছে অদ্ভুত এ নিয়মটি। গাড়ি চালানোর সময় চিত্কার করা, কাউকে অভিসম্পাত করার অভিযোগ পাওয়া গেলে ১০০ মার্কিন ডলার জরিমানা বা ৯০ দিনের কারাবাস জুটতে পারে।

হেডলাইট বন্ধ করা যাবে না
হোক সে দিন অথবা রাত, গ্রীষ্ম বা শীত—কোনো অবস্থায় গাড়ির হেডলাইট বন্ধ করতে পারবেন না আপনি। অদ্ভুত শোনালেও সুইডেনে ২৪ ঘণ্টাই গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে রাখার নিয়ম রয়েছে। সুইডেনের তীব্র শীতে হয়তো এ নিয়মটি ঠিক, কিন্তু জুন মাসে আবহাওয়া ভালো থাকলেও এ নিয়মই সেখানে মানতে হয়।

মদ খাবেন, মাতাল হবেন না
গাড়ি চালানোর সময় মদ খাবেন তা ঠিক আছে। কিন্তু গাড়ি চালানোর সময় মাতলামি করা চলবে না। কোস্টারিকার ট্রাফিক আইন অনুযায়ী চালকের রক্তে ০.৭৫ শতাংশ পর্যন্ত অ্যালকোহল পাওয়া গেলেও তা ঠিক আছে। তবে তার বেশি হয়ে গেলেই চালকের বিপদ।

গাড়িতে পুরোনো অন্তর্বাস নয়
যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে গাড়ি ধোয়ার পর পুরোনো আন্ডারওয়্যার বা অন্তর্বাস দিয়ে গাড়ি মোছা হলে ট্রাফিক আইন ভাঙা হয়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। তবে গাড়ি মোছার জন্য পুরোনো বা নতুন আন্ডারওয়্যার কেউ ব্যবহার করেন, তা কে জানে!

মাতাল হলে সামনের সিটে বসা যাবে না
মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানো অবৈধ। তবে মেসিডোনিয়ার অদ্ভুত নিয়ম হচ্ছে, মাতাল হলে গাড়ির পেছনের সিটে বসে থাকতে হবে। তাহলে গাড়ি কে চালাবে? কৌতুক করে বলা হয়, গাড়িই মাতাল চালককে চালিয়ে নিয়ে যাবে।

চালক মাতাল হলে যাত্রীর জরিমানা
ভাবছেন আপনি ভদ্রস্থ হয়ে গাড়ির পেছনে বসে আছেন বলেই সব ঠিকঠাক আছে? আপনার চালক মাতাল কি না, তার দায়-দায়িত্বও আপনার। জাপানের ট্রাফিক আইন অনুযায়ী, চালক মাতাল হলে যাত্রীকেও জরিমানা গুনতে হবে।

অতিরিক্ত চশমা গাড়িতে থাকতে হবে
গাড়িতে চলার সময় চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী, চোখে প্রেসক্রিপশন গ্লাস পরে আছেন বলে ভাবছেন কোনো অপরাধ নয়? স্পেনের আইন অনুযায়ী, অতিরিক্ত আরেক জোড়া চশমা আপনাকে সঙ্গে রাখতে হবে। দুই জোড়া চশমা ছাড়া গাড়িতে উঠলে জরিমানা গুনতে হবে।

নম্বর প্লেটও সমস্যা
আপনার গাড়ির নম্বর প্লেটের নম্বরের শেষ দুটি ১ বা ২ দিয়ে যদি শেষ হয় তবে বিপদ। ফিলিপাইনের ম্যানিলায় সোমবারের দিন নম্বর প্লেটের শেষে এই দুটি সংখ্যা থাকলে আপনি গাড়ি চালাতে পারবেন না।

গাড়ি চালাতে হলে জামা বাধ্যতামূলক
থাইল্যান্ডে গাড়ি চালানোর সময় জামা গায়ে থাকা বাধ্যতামূলক। খালি গায়ে গাড়ি চালালে আপনাকে নিশ্চিত জরিমানা গুনতে হবে।

খেতে খেতে গাড়ি চালানো যাবে না
সাইপ্রাসে গাড়ি চালানোর সময় খাওয়া বা কোনো কিছু পান করা অপরাধ। গাড়ি চালানোর সময় হাঁটুর ওপর খাবার রাখা ট্রাফিক আইনের লঙ্ঘন। এ জন্য জরিমানা গুনতে হতে পারে।

পথে তেল ফুরালে বিপদ
জার্মানির অটোবান বা দূরপাল্লার পথে জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়াকে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন হিসেবে ধরা হয়। অটোবানে অপ্রয়োজনীয়ভাবে গাড়ি থামানোকেও অপরাধ হিসেবে ধরা হয়।

পথ না জেনে বেরোলেই জরিমানা
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামায় এই অদ্ভুত নিয়মটি দেখা যায়। আপনি যদি আপনার গন্তব্য বা পথ না জেনে রাস্তায় বের হন, তবে আপনার জরিমানা হবে।

কৈশোরে ফ্যাশন

রং ও নকশার বাহারে কিশোর–কিশোরীেদর ঈদের পোশাক এবার বেশ বৈচিত্র্যময়। মডেল: আফনান ও রাইয়ান, পোশাক: লা রিভ, সাজ: ফারজানা শাকিল’স মেকওভার স্যালন, ছবি: কবির হোসেনরং ও নকশার বাহারে কিশোর–কিশোরীেদর ঈদের পোশাক এবার বেশ বৈচিত্র্যময়। মডেল: আফনান ও রাইয়ান, পোশাক: লা রিভ, সাজ: ফারজানা শাকিল’স মেকওভার স্যালন, ছবি: কবির হোসেনশাড়ি বা সালোয়ার-কামিজ নয়, কিশোরী চাইছে তার নিজস্ব স্টাইল অনুযায়ী পোশাক পরতে। বাবার সঙ্গে গিয়েই হয়তো পাঞ্জাবি কিনবে ছেলেটি। কিন্তু পাঞ্জাবি হওয়া চাই একদম তার মনের মতোই। এই ঈদে কেমন হবে কিশোর-কিশোরীর পোশাক—দেখে নিন এই আয়োজনে। 
কামিজের ঘের হচ্ছে নানা রকম। শার্টে থাকছে রঙের বৈচিত্র্যফ্যাশন হাউসগুলো ঘুরে দেখা গেল, ঈদ উপলক্ষে কিশোর-কিশোরীদের জন্য রয়েছে আলাদা আয়োজন। বড়দের পোশাকে ততটা ভিন্নতা চোখে না পড়লেও বৈচিত্র্যময় নকশা আর কাটছাঁটের ভিন্নতা দেখা গেল তাদের পোশাকে। কথা হলো লা রিভের হেড অব ডিজাইন মন্নুজান নার্গিসের সঙ্গে। তিনি জানান, এই বয়সীদের (১২ থেকে ১৯) পোশাক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগটাও থাকে বেশি। 
.এবারের ঈদে লা রিভে টিনএজদের পোশাকে থাকছে প্রাচীন ভারতীয় ও মরোক্কান ঐতিহ্যের ছোঁয়া। ব্রাশ পেইন্টের মাধ্যমে করা হয়েছে উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার।
বাজার ঘুরে দেখা গেল, এবার শুধু নকশাই নয়, পোশাকের কাটছাঁটেও থাকছে ভিন্নতা। প্রজাপতি নকশার প্যাটার্নে তৈরি হয়েছে টিউনিক। কামিজের ঘেরেও থাকছে বৈচিত্র্য। বেশি ঘের দেওয়া কামিজ তো আছেই। পাশাপাশি চলছে লম্বা টপ বা কামিজে অসমান দৈর্ঘ্য অর্থাৎ সামনে বেশি ঘের, পেছনে কম, আবার পেছনে বেশি, সামনে কম ঘেরের নকশার পোশাক। ফতুয়া বা কুর্তায় থাকছে জ্যামিতিক কাট। আরও থাকছে আনারকলি ঘরানার একধরনের লম্বা পোশাকের আয়োজন। এখন স্লিভলেস পোশাক বেশ চলছে, তাই কিছু পোশাকের হাতায় নতুনত্ব আনতে করা হয়েছে পাইপিংয়ের ব্যবহার। কামিজ আর টপের লম্বা হাতায় থাকছে লেস। 
কিশোর–কিশোরীদের ঈদ ফ্যাশনেজিন্স সব সময়ই পছন্দের পোশাক, নানা রকম ছাপা নকশার প্যান্টও এখন বেশ চলছে। এ ছাড়া পালাজ্জো তো আছেই। 
কিশোরীদের পছন্দের পোশাক হিসেবে ‘তাগা’ বরাবরই জনপ্রিয়—বললেন আড়ংয়ের মগবাজার বিক্রয়কেন্দ্রের সহকারী ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম। এখানে দেখা গেল, সুতি, মসলিন, জয়শ্রী সিল্ক, অ্যান্ডি সিল্কের কাপড়ে তৈরি পোশাকে থাকছে নকশি কাঁথা, লোকজ মোটিফে ব্লকপ্রিন্টের কাজ। দুই পাশে পকেটসহ শার্ট নকশার কিছু পোশাকের আয়োজনও থাকছে। কিশোরীদের জন্য পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে অন্যান্য অনুষঙ্গ যেমন ব্যাগ, জুতা তো আছেই।
শুধু ঈদের দিনই নয়, সারা বছরই যাতে টিনএজ ছেলেরা পরতে পারে, এই বিষয়টি মাথায় রেখে সাজানো হয়েছে ওয়েস্ট রঙের ঈদ আয়োজন, জানালেন ডিজাইনার বিপ্লব সাহা। তিনি জানান, ঈদটা এবার বর্ষার সময় হচ্ছে, তা ছাড়া গরমও থাকছে। তাই এই দুটি বিষয়ই প্রাধান্য দিয়ে পোশাকে হালকা ও গাঢ় দুটি রঙের ব্যবহার করা হয়েছে। টি-শার্ট বা পাঞ্জাবি যেটাই হোক, তাতে বেশ রঙের বাহার দেখা যাচ্ছে। 
কিশোর বয়সে মেকআপের বাহার নয়, বরং তরুণ ত্বকের দীপ্তি ফুটে ওঠে—এমন সাজই চাই। চুলে নানা স্টাইল করা যেতে পারে। এলোমেলো বেণিতে থাকতে পারে রংচঙে ক্লিপ, ফিতার নকশা। উঁচু পনিটেইলও বেশ মানায়। 
এখন সাজে উজ্জ্বল বা নিয়ন রঙেরই প্রাধান্য। তবে খুব উজ্জ্বল রঙের লিপস্টিক ব্যবহার না করে বরং নেইল আর্টে বৈচিত্র্য আনা যেতে পারে। চোখে থাকতে পারে হালকা কাজল।

ভ্যালুটপের নতুন কেসিং

ভ্যালুটপ কেসিংভ্যালুটপ কেসিংবাজারে এসেছে ভ্যালুটপ ব্র্যান্ডের ভিটি-এন৩০০এ মডেলের আলট্রা স্লিম এটিএক্স কেসিং। এই কেসিং বাজারে এনেছে প্রযুক্তিপণ্য বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার সিটি টেকনোলজিস।

কম্পিউটার সিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হালকা-পাতলা কেসিংটিতে রয়েছে মাল্টি অ্যাঙ্গেল রোটেবল স্ট্যান্ড, উন্নত পাওয়ার সাপ্লাই, স্পেশাল পাওয়ার বাটন, ইউজার ফ্রেন্ডলি রিস্টার্ট বাটন ইত্যাদি। কেসিংটির দাম দুই হাজার ৬০০ টাকা।

ডেস্কটপ ল্যাপটপ নয়, শীর্ষে থাকবে ট্যাবলেট

..যেভাবে ব্যবহার বাড়ছে সে অনুযায়ী আগামী বছরেই ডেস্কটপ কম্পিউটারকে পেছনে ফেলে শীর্ষে জায়গা করে নেবে ট্যাবলেট কম্পিউটার। ২০১০ সালে অ্যাপলের আইপ্যাড বাজারে আসার পর থেকেই ট্যাবলেটের ব্যবহার বাড়ছে। গবেষকদের ধারণা, চলতি বছরের শেষ নাগাদ ট্যাবলেট বিক্রি হবে ২৫ কোটি ছয় লাখ, যা আগামী বছরে হবে ৩২ কোটি এক লাখ। অন্যদিকে চলতি বছরের শেষ নাগাদ ডেস্কটপ, ল্যাপটপ ও নেটবুক কম্পিউটারের বিক্রি হবে ৩০ কোটি আট লাখ। আগামী বছর এটা বেড়ে সর্বোচ্চ হতে পারে ৩১ কোটি সাত লাখ। গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গার্টনারের গবেষণা পরিচালক রণজিৎ আটওয়াল বলেন, গত বছর কম্পিউটারের বিক্রি বেড়েছে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ, যা চলতি বছর হয়েছে মাত্র ২ দশমিক ৯ শতাংশ।
গত বছর মুঠোফোন বিক্রির পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে ৩ দশমিক ১ শতাংশ। গার্টনারের প্রতিবেদনে আশা করা হয়েছে চলতি বছরের শেষ নাগাদ সারা বিশ্বে স্মার্টফোনের বিক্রি বাড়বে ৬৬ শতাংশ এবং ২০১৮ সাল নাগাদ সেটি হবে ৮৮ শতাংশ।
অপারেটিং সিস্টেমের দিক দিয়ে এগিয়ে আছে অ্যান্ড্রয়েড। চলতি বছরে অ্যান্ড্রয়েডচালিত যন্ত্রের বিক্রির বেড়েছে ৩০ শতাংশ এবং একই সময়ে অ্যাপলের আইওএসচালিত যন্ত্রের বিক্রি বেড়েছে ১৫ শতাংশ। চলতি বছর এগিয়ে আছে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমচালিত যন্ত্রের বিক্রিও। আশা করা হচ্ছে, ২০১৮ সাল নাগাদ বাজারে উইন্ডোজের শেয়ার থাকবে ১০ শতাংশ।

১৫ দেশের কথ্যভাষা শেখাতে ইনায়েতের ওয়েবসাইট

স্পোকেন ল্যাঙ্গুয়েজ টিউটরস্পোকেন ল্যাঙ্গুয়েজ টিউটরকথাবার্তা চালানোর মতো বিদেশি ভাষা জানা যে কত প্রয়োজন তা দেশের বাইরে গেলে হাড়ে হাড়ে বোঝা যায়। যাঁরা বিদেশে যান তাঁদেরও সংশ্লিষ্ট দেশের ভাষা জানার প্রয়োজন হতে পারে। স্থানীয় ভাষায় টুকিটাকি কথাবার্তা বলার জন্য সেই ভাষার কিছু কিছু বিষয় জেনে নিতে পারেন অনলাইনে। এ কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে স্পোকেন ল্যাঙ্গুয়েজ টিউটর (http://www.spokenlanguagetutor.com/) নামের একটি ওয়েবসাইট। সাইটটি নির্মাণ করেছেন সাবেক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইনায়েত হোসাইন।
সাইট নির্মাতা ইনায়েত হোসাইন বলেন, মাতৃভাষার বাইরে দ্বিতীয় একটি ভাষা শিখতে আমরা হিমশিম খাই। স্পোকেন ল্যাঙ্গুয়েজ টিউটর ওয়েবসাইটে যে তথ্য পাবেন তাতে ১৫টি ভাষায় প্রয়োজনীয় আলাপচারিতায় সহায়ক হিসেবে কাজে লাগবে।
সাইটের কনটেন্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিদেশগামীর সম্ভাব্য জরুরি কথোপকথনের কল্পচিত্র বিভিন্ন ভাষায় রূপান্তর করেছেন তিনি। ত্রিশটির বেশি আলাপ প্রসঙ্গ পনেরোটি ভাষায় সাইটে রয়েছে। আরবি, বাংলা, ম্যান্ডারিন (চায়নিজ), ফিলিপিনো, ফরাসি, জার্মান, হিন্দি, ইন্দোনেশিয়ান, ইতালিয়ান, জাপানিজ, কোরিয়ান, মালয়, পর্তুগিজ, রাশিয়ান, স্প্যানিশ, ফারসি, তুর্কি, উর্দু, ভিয়েতনামিজ ও থাই ভাষার আলাপচারিতা এতে রয়েছে। আরও কয়েকটি ভাষা শিগগির সাইটে যুক্ত হবে।
সাইট তৈরি প্রসঙ্গে ইনায়েত হোসাইন বলেন, বিদেশি ভাষা নিয়ে বহুদিন ধরে কাজ করছি। বিদেশগামী শ্রমিকদের কথা ভেবে তিনি এই সাইট তৈরি করেছেন। ভাষান্তর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের তরুণরা তাঁর সঙ্গে কাজ করছেন। ভার্চুয়াল বন্ধুদের সাহায্যে কথোপকথনের প্রয়োজনীয় সংশোধন করেন। স্পোকেন ল্যাঙ্গুয়েজ টিউটর নিয়ে একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরির পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।